বিজ্ঞাপনের বাজার খেয়ে ফেলছে গুগল-ফেসবুক
ডিজিটাল বিজ্ঞাপন মার্কেটে একচেটিয়া ব্যবসা করছে সিলিকন ভ্যালির দুই বৃহৎ কম্পানি গুগল এবং ফেসবুক। গুগল ও ইউটিউবের মূল কম্পানি অ্যালফাবেট ও ফেসবুকের প্রান্তিক ফলাফল থেকে এটি স্পষ্ট হয়েছে। কোটি কোটি ডলার মুনাফার মাধ্যমে সাম্প্রতিক মাসগুলোতে ফেসবুকের রাজস্ব বেড়েছে ব্যাপকভাবে। যেখানে প্রতিদ্বন্দ্বী স্ন্যাপ ইনকরপোরেশন ও টুইটারের মতো প্রতিষ্ঠানগুলো লোকসান কমিয়ে প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতেই লড়াই করে যাচ্ছে।
গবেষণা প্রতিষ্ঠান ই-মার্কেটারের তথ্য অনুযায়ী ডিজিটাল বিজ্ঞাপনের বাজারে এ বছর কম্পানি দুটি বিশ্বের অর্ধেক রাজস্ব দখলে রাখবে। বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারের ৬০ শতাংশের বেশি থাকবে তাদের দখলে। যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে আর কোনো ডিজিটাল বিজ্ঞাপন প্ল্যাটফর্মের শেয়ার ৫ শতাংশের ওপরে নয়।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, বিজ্ঞাপনদাতারা প্রচুর ডাটা চায়। সেই সঙ্গে লাখ লাখ গ্রাহকের কাছে পৌঁছাতে চায়। তবে বিজ্ঞাপনের বাজার যখন পুরোপুরি সম্প্রসারিত হচ্ছে, তখন এই আধিপত্য প্রশ্ন তুলছে—প্রবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে রাখতে প্রতিষ্ঠান দুটি কিভাবে তাদের মুনাফার কোটি কোটি ডলার ব্যবহার করছে।
ব্রিয়ান উইজার নামের এক ঊর্ধ্বতন প্রযুক্তিবিদ বলেন, ডিজিটাল বিজ্ঞাপন শিগগির এমন একটি জায়গায় পৌঁছাবে; যেখানে স্পষ্ট হবে প্রবৃদ্ধির একটি সীমা আছে। আর সেটা শুধু বিনিয়োগ দিয়েই হিসাব করা যাবে না। তবে গুগল ও ফেসবুকের এই একক আধিপত্য বাজারের একচেটিয়ার ব্যবসার ব্যাপারে উদ্বেগ বাড়াচ্ছে। এ মাসেই গুগলকে অনুসন্ধান রেজাল্ট নিয়ে কারসাজি করায় ইউরোপীয় ইউনিয়নে রেকর্ড জরিমানা গুনতে হয়েছে। গুগলের বিরুদ্ধে অভিযোগ হচ্ছে, ইন্টারনেটে কোনো কিছু অনুসন্ধানের ক্ষেত্রে ‘সার্চ ইঞ্জিন’ হিসেবে গুগলের যে প্রাধান্য, তার সুযোগ নিচ্ছে তারা।
বলা হয়, মানুষ ইন্টারনেটে কোনো পণ্য কিনতে গেলেই ‘গুগল শপিং’ নামের একটি সার্ভিস তাদের নিজেদের পছন্দমতো তৈরি করা তালিকাকে সবার আগে ক্রেতার সামনে তুলে ধরছে। কৌশলে এটা করে যাচ্ছিল গুগল, এ জন্য তারা ব্যবহার করছে গুগল শপিং নামের একটি সেবা।
ইন্টারনেটে যেকোনো পণ্য খুঁজলেই সেসব জিনিসের ছবি, দাম, কোন দোকানে তা পাওয়া যায়, ক্রেতারা কোনটাকে বেশি পছন্দ করে তার তুলনামূলক স্কোর, এসব তুলে ধরে গুগল শপিং। ইউরোপে প্রতিষ্ঠানটিকে আরো দুটি তদন্তের মুখে পড়তে হচ্ছে।
ফেসবুক অবশ্য তাদের মুনাফায় কোনো কারসাজি আছে কি না এ ব্যাপারে মন্তব্য করতে রাজি হয়নি। তবে এর আগে তারা একচেটিয়াভাবে গুগলের সঙ্গে ব্যবসার কথা নাকচ করে দেয়। তারা বলছে, ডিজিটাল বিজ্ঞাপনী প্ল্যাটফর্মে তারা অনেকের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে টিকে আছে। পুরো বিজ্ঞাপনের বাজারে তাদের ৫ শতাংশেরও কম মার্কেট শেয়ার আছে। অ্যালফাবেটও এ ব্যাপারে রয়টার্সকে কিছু জানাতে অসম্মতি জানিয়েছে।
No comments