একরামকে ‘গুলি করার মুহূর্তের’ গা শিউরে ওঠা অডিও নিয়ে তোলপাড়
নিউজ ডেস্ক: টেকনাফে গত শনিবার র্যাবের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে সেখানকার পৌর কাউন্সিলর ও স্থানীয় যুবলীগের সাবেক সভাপতি মো. একরামুল হকের নিহত হওয়ার ঘটনা নিয়ে বিভিন্ন মহলে আলোচনা-সমালোচনা চলছে। এরই মধ্যে গত বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলন করে চারটি ক্লিপ মিলিয়ে ১৪ মিনিট ২২ সেকেন্ডের একটি অডিও রেকর্ড প্রকাশ করেছে নিহতের পরিবার।
নিহত হওয়ার ঠিক আগে একরামুল হকের সঙ্গে তার দুই মেয়ে ও স্ত্রীর টেলিফোনে ‘শেষ কথোপকথনের’ রেকর্ডটি প্রকাশ করে পরিবার। এই অডিও রেকর্ড ইতোমধ্যেই ইন্টারনেটে ভাইরাল হয়ে গেছে। একরামকে গুলি করার মুহূর্তের সেই অডিও ক্লিপ শুনলে যে কারও গা শিউরে উঠবে। একরামের স্ত্রী আয়েশা গত ২৬ মে রাতে তার স্বামীর সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা বলার চেষ্টা করছিলেন। সেই অডিও ছড়িয়ে পড়ার পর পরই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চলমান মাদকবিরোধী অভিযান নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে। মানবাধিকারকর্মীরা একরামের মৃত্যুর পুরো ঘটনার তদন্ত দাবি করেছেন।
সাংবাদিকদের অডিওটির চারটি ক্লিপ দিয়ে নিহত কমিশনারের স্ত্রী অভিযোগ করেন, তার স্বামীকে ‘ঠান্ডা মাথায় হত্যা করা হয়েছে।’ মোট ১৪ মিনিট ২২ সেকেন্ডের অডিও ক্লিপটির এক পর্যায়ে শোনা যায় গুলির শব্দ, মৃত্যুপথযাত্রী একরামের আর্তনাদ আর আয়েশার বুকফাটা চিৎকার! চোখের পানি মুছতে মুছতে আয়েশা বলেন, সবশেষ রাত ১১টা ৩২ মিনিটে তিনি ফোন রিসিভ করলেও কথা বলেননি। ওই সময় মোবাইলের অপর প্রান্তের সব কথা আমরা শুনতে পেরেছি। আমরা শুনছিলাম কত নির্মম পরিস্থিতি তিনি পার করেছেন। কি নির্দয়ভাবে তাকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। আমার স্বামীর আর্তনাদ এখনো আমার কানে বাজছে।
এ সময় মাকে জড়িয়ে ধরে হাউমাউ করে চিৎকার দিয়ে কেঁদেছে একরামের দুই মেয়ে। চিৎকার দিয়ে বলেন, আমার আব্বুকে হত্যা করা হয়েছে। আব্বুকে হত্যার বিচার চাই। আব্বু ছাড়া কে আমাদের স্কুলে নিয়ে যাবে। আমরা কাকে আব্বু বলে ডাকবো। এ সময় অসহায় মেয়ে দুটির কান্নায় সংবাদ সম্মেলনের পরিবেশ ভারি হয়ে যায়। প্রায় ১৫ মিনিট বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েন উপস্থিত সবাই।
আয়েশা সাংবাদিকদের বলেন, একটি বিশেষ গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তার ক্রমাগত ফোনের কারণে গত ২৬ মে রাত ৯টার দিকে একরাম বাড়ি থেকে বের হন। রাত ১১টার সময়ও বাড়ি ফিরে না এলে, তার মেয়ে সোয়া ১১টার দিকে ফোন করে। সেসময় একরাম মেয়েকে জানান যে, তিনি একজন মেজর সাহেবের সঙ্গে হ্নীলা যাচ্ছেন। যে কথা অডিও ক্লিপটিতেও শোনা যায়। শুরুর একটি ক্লিপে মেয়ের সঙ্গে কথা বলছিলেন। মেয়ের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি টিএনও অফিসে যাচ্ছি তো, আমি চলে আসব আম্মু।’ ‘কতক্ষণ হবে?’ মেয়ের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন ‘বেশিক্ষণ লাগবে না। আমি চলে আসবো ইনশাল্লাহ।’ সেই চলে আসা আর হয়নি একরামের। স্বামীর খোঁজ নেওয়ার জন্যে রাত ১১টা ৩২ মিনিটে আবারও ফোন করেন তার স্ত্রী আয়েশা।
ওপাশ থেকে কিছু বিচ্ছিন্ন শব্দ ছাড়া কারও কথা শোনা যাচ্ছিল না। এ প্রান্ত থেকে আয়েশা ‘হ্যালো’ ‘হ্যালো’ করে যাচ্ছিলেন। আয়শা বলছিলেন, ‘হ্যালো!… হ্যালো!… হ্যালো কে? আমি কমিশনারের সাথে কথা বলতে চাচ্ছি।… আমি উনার মিসেস বলতেছি… হ্যালো! হ্যালো…’ ওপাশ থেকে একইভাবে কিছু শব্দ হতে থাকে অনুচ্চস্বরে। হঠাৎ অস্ত্র লোড করার শব্দ এবং সাথে সাথে গুলি! একটি পুরুষ কণ্ঠের আর্তনাদ ‘ওহ’! এরপর আবারও আরেকটি গুলি! ফোনের এ প্রান্ত থেকে আয়শা ‘ও আল্লাহ…’ বলে বুকফাটা আর্তনাদ করে ওঠেন! একইসঙ্গে আরও শিশুকণ্ঠের কান্না শোনা যায়। আয়শাকে বলতে শোনা যায়, ‘আমার জামাই কিছু করে নাই…আমার জামাই কিছু করে নাই…। আমরা বিনা দোষী।… ‘ ফোনের অপর প্রান্ত থেকে তখন ভেসে আসে হুইসেলের আওয়াজ। কিছু গালাগালির আওয়াজ। আর এ প্রান্ত থেক আয়শা বলে যাচ্ছিলেন, ‘আমার হাজব্যান্ড কিছু করে নাই…. আমার হাজব্যান্ড কিছু করে নাই…..।’
কাউন্সিলার একরামের মৃত্যুর ঘটনার বিষয়ে মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান বলেন, প্রতিটি হত্যাকান্ডই দুঃখজনক। তবে কিছু কিছু ঘটনা মর্মস্পর্শী হয়ে যায়। কাউন্সিলর একরামের মৃত্যুর ঘটনা তেমনই একটি মর্মান্তিক দুঃখজনক ঘটনা। তাই আমার মনে হয় নিহতের পরিবার যে অভিযোগ তুলেছে, তার সুষ্ঠু তদন্ত হওয়া দরকার। কেউ দোষী হলে তাকে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করলে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা হ্রাস পাবে। এদিকে, র্যাব বলেছে, প্রকাশ হওয়া অডিও খতিয়ে দেখছে বাহিনীটির সদর দপ্তর। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেছেন, আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনীর গুলিবর্ষণের অন্যান্য ঘটনার মতো এই ঘটনাও তদন্ত করা হবে।
নিহত হওয়ার ঠিক আগে একরামুল হকের সঙ্গে তার দুই মেয়ে ও স্ত্রীর টেলিফোনে ‘শেষ কথোপকথনের’ রেকর্ডটি প্রকাশ করে পরিবার। এই অডিও রেকর্ড ইতোমধ্যেই ইন্টারনেটে ভাইরাল হয়ে গেছে। একরামকে গুলি করার মুহূর্তের সেই অডিও ক্লিপ শুনলে যে কারও গা শিউরে উঠবে। একরামের স্ত্রী আয়েশা গত ২৬ মে রাতে তার স্বামীর সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা বলার চেষ্টা করছিলেন। সেই অডিও ছড়িয়ে পড়ার পর পরই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চলমান মাদকবিরোধী অভিযান নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে। মানবাধিকারকর্মীরা একরামের মৃত্যুর পুরো ঘটনার তদন্ত দাবি করেছেন।
সাংবাদিকদের অডিওটির চারটি ক্লিপ দিয়ে নিহত কমিশনারের স্ত্রী অভিযোগ করেন, তার স্বামীকে ‘ঠান্ডা মাথায় হত্যা করা হয়েছে।’ মোট ১৪ মিনিট ২২ সেকেন্ডের অডিও ক্লিপটির এক পর্যায়ে শোনা যায় গুলির শব্দ, মৃত্যুপথযাত্রী একরামের আর্তনাদ আর আয়েশার বুকফাটা চিৎকার! চোখের পানি মুছতে মুছতে আয়েশা বলেন, সবশেষ রাত ১১টা ৩২ মিনিটে তিনি ফোন রিসিভ করলেও কথা বলেননি। ওই সময় মোবাইলের অপর প্রান্তের সব কথা আমরা শুনতে পেরেছি। আমরা শুনছিলাম কত নির্মম পরিস্থিতি তিনি পার করেছেন। কি নির্দয়ভাবে তাকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। আমার স্বামীর আর্তনাদ এখনো আমার কানে বাজছে।
এ সময় মাকে জড়িয়ে ধরে হাউমাউ করে চিৎকার দিয়ে কেঁদেছে একরামের দুই মেয়ে। চিৎকার দিয়ে বলেন, আমার আব্বুকে হত্যা করা হয়েছে। আব্বুকে হত্যার বিচার চাই। আব্বু ছাড়া কে আমাদের স্কুলে নিয়ে যাবে। আমরা কাকে আব্বু বলে ডাকবো। এ সময় অসহায় মেয়ে দুটির কান্নায় সংবাদ সম্মেলনের পরিবেশ ভারি হয়ে যায়। প্রায় ১৫ মিনিট বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েন উপস্থিত সবাই।
আয়েশা সাংবাদিকদের বলেন, একটি বিশেষ গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তার ক্রমাগত ফোনের কারণে গত ২৬ মে রাত ৯টার দিকে একরাম বাড়ি থেকে বের হন। রাত ১১টার সময়ও বাড়ি ফিরে না এলে, তার মেয়ে সোয়া ১১টার দিকে ফোন করে। সেসময় একরাম মেয়েকে জানান যে, তিনি একজন মেজর সাহেবের সঙ্গে হ্নীলা যাচ্ছেন। যে কথা অডিও ক্লিপটিতেও শোনা যায়। শুরুর একটি ক্লিপে মেয়ের সঙ্গে কথা বলছিলেন। মেয়ের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি টিএনও অফিসে যাচ্ছি তো, আমি চলে আসব আম্মু।’ ‘কতক্ষণ হবে?’ মেয়ের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন ‘বেশিক্ষণ লাগবে না। আমি চলে আসবো ইনশাল্লাহ।’ সেই চলে আসা আর হয়নি একরামের। স্বামীর খোঁজ নেওয়ার জন্যে রাত ১১টা ৩২ মিনিটে আবারও ফোন করেন তার স্ত্রী আয়েশা।
ওপাশ থেকে কিছু বিচ্ছিন্ন শব্দ ছাড়া কারও কথা শোনা যাচ্ছিল না। এ প্রান্ত থেকে আয়েশা ‘হ্যালো’ ‘হ্যালো’ করে যাচ্ছিলেন। আয়শা বলছিলেন, ‘হ্যালো!… হ্যালো!… হ্যালো কে? আমি কমিশনারের সাথে কথা বলতে চাচ্ছি।… আমি উনার মিসেস বলতেছি… হ্যালো! হ্যালো…’ ওপাশ থেকে একইভাবে কিছু শব্দ হতে থাকে অনুচ্চস্বরে। হঠাৎ অস্ত্র লোড করার শব্দ এবং সাথে সাথে গুলি! একটি পুরুষ কণ্ঠের আর্তনাদ ‘ওহ’! এরপর আবারও আরেকটি গুলি! ফোনের এ প্রান্ত থেকে আয়শা ‘ও আল্লাহ…’ বলে বুকফাটা আর্তনাদ করে ওঠেন! একইসঙ্গে আরও শিশুকণ্ঠের কান্না শোনা যায়। আয়শাকে বলতে শোনা যায়, ‘আমার জামাই কিছু করে নাই…আমার জামাই কিছু করে নাই…। আমরা বিনা দোষী।… ‘ ফোনের অপর প্রান্ত থেকে তখন ভেসে আসে হুইসেলের আওয়াজ। কিছু গালাগালির আওয়াজ। আর এ প্রান্ত থেক আয়শা বলে যাচ্ছিলেন, ‘আমার হাজব্যান্ড কিছু করে নাই…. আমার হাজব্যান্ড কিছু করে নাই…..।’
কাউন্সিলার একরামের মৃত্যুর ঘটনার বিষয়ে মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান বলেন, প্রতিটি হত্যাকান্ডই দুঃখজনক। তবে কিছু কিছু ঘটনা মর্মস্পর্শী হয়ে যায়। কাউন্সিলর একরামের মৃত্যুর ঘটনা তেমনই একটি মর্মান্তিক দুঃখজনক ঘটনা। তাই আমার মনে হয় নিহতের পরিবার যে অভিযোগ তুলেছে, তার সুষ্ঠু তদন্ত হওয়া দরকার। কেউ দোষী হলে তাকে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করলে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা হ্রাস পাবে। এদিকে, র্যাব বলেছে, প্রকাশ হওয়া অডিও খতিয়ে দেখছে বাহিনীটির সদর দপ্তর। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেছেন, আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনীর গুলিবর্ষণের অন্যান্য ঘটনার মতো এই ঘটনাও তদন্ত করা হবে।
নিচের ভিডিওতে শুনুন সেই অডিও ক্লিপ।
No comments