রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ইসির সংলাপ ২৪ আগস্ট থেকে
একাদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে আগামী ২৪ আগস্ট থেকে ৪০টি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের সঙ্গে পর্যায়ক্রমে সংলাপে বসতে যাচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। পবিত্র ঈদুল আযহার পর ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ-বিএনপির সঙ্গে সংলাপে বসবে কমিশন। প্রথম দিনে বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট-বিএনএফ ও বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের সঙ্গে সংলাপ হবে। প্রতিটি রাজনৈতিক দলের ১০ জন প্রতিনিধি এ সংলাপে অংশগ্রহণের সুযোগ পাবেন। তবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ, বিএনপি চাইলে কমিশনের অনুমতি নিয়ে প্রতিনিধির অংশ বাড়াতে পারবে। ইসি সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
ইসি সচিবালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ জানিয়েছেন, আগস্টের শেষ সপ্তাহে রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপ অনুষ্ঠিত হবে। প্রতিদিন দুটি করে ঈদের আগে ৬টি দলের সঙ্গে সংলাপ করা হবে। ঈদের পর ১০ সেপ্টেম্বর থেকে বাকি রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ধারাবাহিকভাবে সংলাপ অনুষ্ঠিত হবে। ইসি সূত্রে জানা গেছে, আগারগাঁও নির্বাচন ভবনে ২৪ আগস্ট সকাল ১১টায় রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপ শুরু হবে। দ্বিতীয় দফায় ওই দিন বিকাল ৩টা থেকে সংলাপ হবে। ঈদের আগে বিএনএফ, সাংস্কৃতিক মুক্তিজোট ছাড়া বাংলাদেশ মুসলিম লীগ-বিএমএল, খেলাফত মজলিশ, বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি ও জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি-জাগপার সঙ্গে সংলাপ হবে। ঈদের পর ১০ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের সঙ্গে সংলাপ হবে। সর্বশেষ সংলাপ হবে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি-এলডিপির সঙ্গে। রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন তালিকার শেষ দিক থেকে সংলাপ শুরুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বর্তমান কমিশন। সেই হিসেবে বিএনপির একদিন পর আওয়ামী লীগের সঙ্গে সংলাপ করবে কমিশন। সেপ্টেম্বরের ২০ তারিখের পর আওয়ামী লীগ-বিএনপির সঙ্গে সংলাপ হতে পারে।
এদিকে, আগামী ১৬ ও ১৭ আগস্ট সিনিয়র সাংবাদিকদের সঙ্গে সংলাপ হচ্ছে। দুই ধাপে এই সংলাপের প্রথম দিনে প্রিন্ট মিডিয়ার এবং দ্বিতীয় দিনে ইলেকট্রনিক-অনলাইন মিডিয়ার সম্পাদক ও সাংবাদিক নেতাদের সঙ্গে সংলাপ হবে। সাংবাদিক নেতা হিসেবে জাতীয় প্রেসক্লাব, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি/সধারণ সম্পাদক আমন্ত্রিত হচ্ছেন। এই সংলাপে গণমাধ্যমের ৬০ জন প্রতিনিধিকে আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে। তবে সংলাপে আমন্ত্রিতদের মধ্যে কেউ অনুপস্থিত থাকলে পরবর্তীতে লিখিত বক্তব্য বা সুপারিশ জমা দেওয়ার সুযোগ পাবেন বলে জানিয়েছে ইসির ভারপ্রাপ্ত সচিব।
ইসি সচিব বলেন, অক্টোবরে নির্বাচন বিশেষজ্ঞ, সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার, নির্বাচন কমিশনার নারী নেতৃত্বের সঙ্গে সংলাপ করা হবে। সংলাপ থেকে যেসব সুপারিশ আসবে তা সমন্বয় করে কমিশনে উপস্থাপন করা হবে। পরবর্তীতে আইন-কানুনের কোনো সংশোধন প্রয়োজন হলে প্রস্তাবনা তৈরি করে সরকারের কাছে পাঠানো হবে।
এর আগে গত ৩১ জুলাই সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে দিনব্যাপী রুদ্ধদ্বার সংলাপ করেছিল ইসি। সুশীল সমাজের ৫৯ জনকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিল ইসি।
ইসির সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আন্তর্জাতিক মহলে দৃশ্যমান করতে এবং তাদের আস্থা অর্জনের জন্যই এই সংলাপ হচ্ছে। সংলাপের এজেন্ডায় নির্বাচনী রোডম্যাপ বাস্তবায়ন, গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ-১৯৭২(আরপিও) সংশোধনী এনে যুগোপযোগী করা এবং সীমানা পুনঃনির্ধারণ সংক্রান্ত অধ্যাদেশ সংশোধন বিষয়ে অংশীজনদের মতামত নেওয়া হচ্ছে।
উল্লেখ্য, সংবিধান অনুযায়ী ২০১৯ সালের ২৮ জানুয়ারির পূর্বের ৯০ দিনের মধ্যে একাদশ সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। ২০১৮ সালের ৩০ অক্টোবরের পর শুরু হবে একাদশ সংসদ নির্বাচনের সময় গণনা।
No comments