হিলি স্থলবন্দর দিয়ে চালের আমদানি বেড়েছে
শুল্কহার কমানোর প্রভাব
ভারত থেকে দেশে চাল আমদানিতে শুল্কহার কমানোর ফলে দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে চাল আমদানির পরিমাণ আগের তুলনায় বেড়ে গেছে। এতে করে দেশের বাজারে চালের সরবরাহ বেড়ে যাওয়ায় গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে আমদানি করা চালের দাম কমেছে ৪-৫ টাকা করে। নতুন করে চাল আমদানির জন্য প্রচুর পরিমাণে এলসি ওপেন করছেন আমদানিকারকরা। এতে করে দেশে প্রবেশের অপেক্ষায় ভারতের অভ্যন্তরে আটকা রয়েছে হাজার হাজার টন চাল। এসব চাল দেশে প্রবেশ করলে দাম আরও কমবে বলে বন্দরের আমদানিকারকরা জানান। অন্যদিকে স্থিতিশীল রয়েছে দেশীয় চালের দাম।
চাল আমদানিতে ২৮ শতাংশ শুল্ক আরোপ থাকায় হিলি স্থলবন্দর দিয়ে চাল আমদানির পরিমাণ একেবারে কমে গিয়েছিল। তার ওপর বোরো মৌসুমে দেশের হাওরাঞ্চলে বন্যা ও ব্লাস্ট রোগে ধানক্ষেতের ব্যাপক ক্ষতিসাধন হওয়ায় দেশে ধানের উত্পাদন কম হয়েছে। এরপর চালের সরবরাহ কমে যাওয়ায় বাজারে দাম বাড়তে থাকে। এ পরিস্থিতিতে গত ২০ জুন চাল আমদানিতে শুল্কহার ২৮ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশ করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এতে করে বন্দর দিয়ে চালের আমদানি বেড়ে গেছে।
হিলি স্থলবন্দর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, শুল্কহার কমানোর ফলে বন্দর দিয়ে গড়ে প্রতিদিন ৩০-৩৫ ট্রাক চাল আমদানি হচ্ছে। গত ২০ জুন শুল্কহার কমানোর পর থেকে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ৯ কার্যদিবসে ২২৬টি ট্রাকে ৭ হাজার ২৯১ টন চাল আমদানি হয়েছে।
হিলি স্থলবন্দরের চাল আমদানিকারক মামুনুর রশিদ লেবু ও রাজীব দত্ত জানান, গত ২০ জুন চাল আমদানিতে শুল্কহার ২৮ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশ নির্ধারণ করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। ফলে বন্দর দিয়ে প্রচুর পরিমাণে চাল ভারত থেকে দেশে আমদানি হচ্ছে। এতে করে ইতোমধ্যেই বন্দর দিয়ে যে পরিমাণ চাল দেশে প্রবেশ করেছে এতে দেশের বাজারে চালের দাম কেজিপ্রতি ৪-৫ টাকা করে কমেছে। আমদানিকারকরা নতুন করে চাল আমদানির জন্য প্রচুর পরিমাণে চালের এলসি ওপেন করছেন। পাইপলাইনে আরও কয়েক হাজার টন চাল রয়েছে দেশে প্রবেশের অপেক্ষায়। এসব চাল বন্দর দিয়ে ঢুকতে শুরু করলে দাম আরও কমে আসবে।
হিলি বাজারের পাইকারি চাল বিক্রেতা অনুপ বসাক জানান, এক সপ্তাহের ব্যবধানে হিলিতে প্রতিকেজিতে আমদানি করা চালের দাম কমেছে ৪-৫ টাকা করে। এর মূল কারণ হচ্ছে চাল আমদানিতে শুল্ক কমানোর ফলে ভারত থেকে চাল আমদানি শুরু হওয়ায় দেশের বাজারে চালের সরবরাহ খানিকটা বেড়েছে। এ কারণে ইতোমধ্যেই আমদানি করা ভারতীয় চালের দাম প্রতিকেজিতে ৪-৫ টাকা করে কমেছে আগের তুলনায়। আগে যে স্বর্ণা চাল বাজারে বিক্রি হচ্ছিল ৪৪ টাকা কেজি দরে এখন সে চাল বিক্রি হচ্ছে ৩৮-৩৯ টাকা কেজি দরে। এছাড়াও রত্না জাতের চাল আগে বিক্রি হয়েছিল ৪৫-৪৬ টাকা কেজি দরে। এখন সে চাল বিক্রি হচ্ছে ৪০-৪১ টাকা কেজি দরে। তিনি জানান, বাজারে আমদানি করা চালের দাম কমলেও দেশি চালের দাম স্থিতিশীল রয়েছে। বাজারে আটাশ জাতের চাল বিক্রি হচ্ছে ৪১-৪২ টাকা কেজিতে। পাইজাম জাতের চাল ৫০, মিনিকেট জাতের চাল ৫২ ও নাজিরশাইল বিক্রি হচ্ছে ৪৮ টাকা কেজি দরে।
হিলি স্থলবন্দর পরিচালনাকারী পানামা হিলি পোর্ট লিঙ্ক লিমিটেডের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. সোহরাব হোসেন জানান, চাল আমদানিতে শুল্কহার কমানোর ফলে বন্দর দিয়ে চাল আমদানির পরিমাণ অনেক বেড়ে গেছে। বর্তমানে বন্দর দিয়ে গড়ে প্রতিদিন ৩০-৩৫ ট্রাক করে চাল আমদানি হচ্ছে। গত ২০ জুন থেকে ৬ জুলাই পর্যন্ত ৯ কার্যদিবসে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে প্রায় ৮ হাজার টনের মতো চাল আমদানি হয়েছে।
No comments