আগামী সাত দিনের মধ্যে তথ্যপ্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারা বাতিলের আল্টিমেটাম দিয়েছে বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (ক্র্যাব)। বৃহস্পতিবার (১৩ জুলাই) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। ক্র্যাব সদস্যসহ সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মামলা প্রত্যাহার ও ৫৭ ধারা বাতিলের দাবিতে সমাবেশটি হয়েছে।
বেঁধে দেওয়া সময়সীমার মধ্যে ৫৭ ধারা বাতিল না হলে আন্দোলন আরও কঠিন হবে বলে জানান ক্র্যাব সভাপতি আবু সালেহ আকন। তার ভাষ্য, ‘আগামী সাত দিনের মধ্যে ৫৭ ধারার মতো কালো আইন বাতিল করতে হবে। এছাড়া সাংবাদিক ধ্রুবর বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মামলা প্রত্যাহার করে নিতে হবে। তা না হলে সাত দিন পর আমরা একই জায়গায় বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল করবো। এরপরও ৫৭ ধারা বাতিল না হলে আমরা আরও কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবো।’
ক্র্যাব সভাপতি আরও বলেন, ‘ধ্রুবর বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের পর আমরা রাজপথে থাকার ঘোষণা দিয়েছিলাম। এরপর মানিকগঞ্জের জ্যেষ্ঠ সহকারী জজ মো. মাহবুবুর রহমান এক সাংবাদিকের মাধ্যমে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করে মামলা প্রত্যাহার করবেন বলে জানিয়েছিলেন। কিন্তু আজ এক মাস পার হলেও তিনি সেটি করেননি। তাই আমরা তাকে আর এক সপ্তাহ সময় দেব। এর ভেতরে তিনি মামলা প্রত্যাহার না করলে আমরাও আরো কঠোর হবো।
আইসিটি অ্যাক্টের ৫৭ ধারায় খুবই নগণ্য সংখ্যক গ্রেফতার হয়েছে বলে বুধবার (১২ জুলাই) জাতীয় সংসদের প্রশ্নোত্তর পর্বে দাবি করেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু। তার এমন বক্তব্যের সমালোচনা করে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) সাধারণ সম্পাদক সোহেল হায়দার চৌধুরী বলেন, ‘তার এই বক্তব্য আমাদের ক্ষুব্ধ করেছে। তিনি তথ্যমন্ত্রী হয়ে ভুল তথ্য দিয়েছেন। আমাদের কাছে থাকা তথ্যমতে সারাদেশে এ পর্যন্ত অর্ধশতরও বেশি সাংবাদিক ৫৭ ধারার শিকার হয়েছেন। এখনও প্রতি সপ্তাহে একের পর এক মামলা হচ্ছে। যে অবস্থা শুরু হয়েছে তাতে খুব দ্রুত এর সংখ্যা ১০০ ছাড়িয়ে যাবে।’
মানববন্ধনে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাধারণ সম্পাদক মুরসালিন নোমানী জানান, গত দুই মাসে সারাদেশে ২২ জন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে তথ্যপ্রযুক্তি আইনে মামলা হয়েছে। তাদের ১৯ জনই রিপোর্টার। তিনি বলেন, ‘চলতি সংসদ অধিবেশনে তথ্যপ্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারা বাতিল করতে হবে। আইনমন্ত্রী গত কয়েক বছর ধরে ৫৭ ধারা বাতিলের কথা বলছিলেন। যেহেতু সরকার এটি বাতিল করতে সাংবাদিকদের সঙ্গে একমত, সেহেতু দ্রুত তা বাস্তবায়ন করা উচিত।’
বিক্ষোভ সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে আরও বক্তব্য রাখেন ক্র্যাবের সাধারণ সম্পাদক সারোয়ার আলম, জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক সৈয়দ আবদাল আহমেদ, ডিআরইউ’র দফতর সম্পাদক নয়ন মুরাদ প্রমুখ।
No comments