সাদামাটা তবু বিদেশি বাড়ানোর দাবি
অদ্ভুতুড়ে এক গোঁ ধরেছে ফ্র্যাঞ্চাইজিরা—বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) ম্যাচপ্রতি বিদেশির সংখ্যা বাড়াতে হবে। সুযোগ দিতে হবে একাদশে চারজনের পরিবর্তে পাঁচ বিদেশি খেলার। মানসম্পন্ন পর্যাপ্ত দেশি খেলোয়াড় নেই—এই অজুহাতে বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলও ওই দাবি মেনে নিতে নিমরাজি যেন। কিন্তু মান বিবেচনায় বিদেশি খেলোয়াড়দের মজুদটাও যে অপর্যাপ্ত হওয়ার আশঙ্কা, সেটি তো ভেবে দেখছেন না কেউ।
গত বিপিএলে এক ঝলক আলো ফেলা যাক। তাহলেই ব্যাপারটি স্পষ্ট হবে দিবালোকের মতো। ২০১৬ সালের এই টি-টোয়েন্টি আসরে সাকুল্যে বিদেশি আসেন ৫৪ জন। সবচেয়ে বেশি পাকিস্তানের ১৫ জন। ওয়েস্ট ইন্ডিজ (১৩), শ্রীলঙ্কা (১০), ইংল্যান্ড (১০) থেকেও বিপিএল জোয়ারে গা ভাসানো ক্রিকেটারের সংখ্যা কম নয়। এর বাইরে নিউজিল্যান্ডের দুই, আফগানিস্তানের তিন এবং নেদারল্যান্ডসের একজন খেলে গেছেন বাংলাদেশে। টেস্ট খেলুড়ে দেশগুলোর মধ্যে ভারত, অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা ও জিম্বাবুয়ের কেউ আসেননি সেবার। এর মধ্যে প্রথম তিন দলের কোনো ক্রিকেটারের এবারও বিপিএলে আসার সম্ভাবনা ক্ষীণ, অন্তত মানসম্পন্ন কেউ তো নিশ্চিতভাবেই আসছেন না। আর জিম্বাবুয়ের ক্রিকেটাররা বিপিএলের মানদণ্ড বিবেচনায় ‘মেয়াদোত্তীর্ণ’ হয়ে গেছেন আগেই! অবশ্য এবারের বিপিএলে একাদশে পাঁচ বিদেশির সুযোগ দিলে অমন মেয়াদ ফুরোনো মানহীন ক্রিকেটারের ছড়াছড়ি হওয়ার আশঙ্কা প্রবল। গতবারের সঙ্গে তুলনা করে দেখুন না। সেবার বিপিএলে দল ছিল সাতটি। প্রতি দলের প্রতি ম্যাচের একাদশে চারজন করে বিদেশি খেলানোর সুযোগ ছিল। অর্থাৎ, প্রতি রাউন্ডকে একক-ভিত্তি হিসেবে ধরলে সর্বোচ্চ ২৮ জন বিদেশি। তবে রেজিস্ট্রেশন তো আর চারজন করে নয়। দলের প্রয়োজন, ফর্মের ওঠানামা, ক্রিকেটারদের প্রাপ্যতা সব মিলিয়ে একাদশে বিদেশি খেলোয়াড় হয়েছে অদল-বদল। ২৮ জনের জায়গা পূরণ হয়েছে ৫৪ জন দিয়ে। এবারের বিপিএলে দলসংখ্যা বাড়ছে একটি। সঙ্গে একাদশেও বিদেশি বাড়ানোর প্রস্তাব। তো আট দলের প্রতি ম্যাচের একাদশে পাঁচ বিদেশি করে ধরলে মোট ৪০ জন ক্রিকেটার। গত বিপিএলে এই একক-ভিত্তি ২৮ গিয়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় দ্বিগুণ, অর্থাৎ ৫৪-তে। সে হিসাবে এবারের ৪০ এর দ্বিগুণ প্রায় ৮০ জন বিদেশি ক্রিকেটার।
No comments