ঢাকা ১ আসন, মনোনয়ন নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে
ঢাকা ১ (দোহার-নবাবগঞ্জ) আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মনোনয়ন নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক ও অনলাইন এখন সরগরম। গত ২৫ জুলাই মঙ্গলবার রাতে উপজেলা আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের কয়েকজন নেতা দলের সাধারণ সম্পাদক সড়ক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের উদ্বৃতি দিয়ে লেখা ফেসবুক পোস্টকে কেন্দ্র করে আলোচনা যেন তুঙ্গে উঠে।
দোহার উপজেলা যুবলীগের সাবেক নেতা ও পৌরসভা কাউন্সিলর রাকিবুল ইসলাম রাহিম তার ফেসবুক আইডিতে লেখেন, ২০১৯ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা ১ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী সালমান এফ রহমান। এই সুখবরটি দিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে ওবায়দুল কাদের। তিনি মৌখিকভাবে দোহার উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নজরুল ইসলাম বাবুল, সাধারণ সম্পাদক আলী আহসান খোকন ও সাংগঠনিক সম্পাদক আলমগীর হোসেনকে জানিয়েছেন। ওবায়দুল কাদের নৌকা মার্কার পক্ষে সালমান রহমানের জন্য দোহার-নবাবগঞ্জ উপজেলার সকল ভোটারদের ঘরে ঘরে গিয়ে উঠান বৈঠকের মাধ্যমে ভোট চাইতে বলেছেন।
গত ২৫ জুলাই রাত ১০টা ৪৫ মিনিটে রাহিম কমিশনারের ব্যক্তিগত আইডি থেকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে লেখা এ পোস্টটি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। পক্ষে-বিপক্ষে বিভিন্ন ধরনের কমেন্টসও আসতে শুরু করে। সালমান এফ রহমান এর অনুসারীরা দ্রুত ওই পোস্টটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দেন। কেউ আবার ওই পোস্ট অনুসরণ করে নিজ নিজ আইডি থেকে ঢাকা ১ আসন থেকে সালমান এফ রহমানের প্রার্থিতার বিষয়টি নিশ্চিত করে পৃথকভাবে পোস্ট দেন। বেশ কয়েকটি অনলাইনও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি সংবাদ আকারে প্রকাশ করেন। ক্রমেই বিভ্রান্তি বাড়তে থাকে দোহার ও নবাবগঞ্জ উপজেলার আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের মাঝে। অন্যদলের নেতাকর্মীদের মাঝে বিষয়টির গুরুত্ব কম ছিল না। সব মিলিয়ে দোহার-নবাবগঞ্জের রাজনীতিতে বিষয়টি আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়।
নির্বাচনী হিসাব-নিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ঢাকা ১ আসনটি নিয়ে হঠাৎ করেই দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সিদ্ধান্ত দিয়ে দিলেন এমন কথাও বিশ্বাস করতে পারছিলেন না অনেকে।
বিষয়টি নিয়ে দোহার ও নবাবগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের বেশ কয়েকজন নেতাকর্মীরা সাথে কথা হলে তারা জানান, জাতীয় নির্বাচনের ক্ষেত্রে ঢাকা ১ আসনটি বেশ গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এ আসনে হেভিওয়েট একাধিক প্রার্থী রয়েছেন। তা ছাড়া দুই উপজেলার আওয়ামী লীগে গ্রুপিং-লবিংও রয়েছে। সবকিছুর পর প্রার্থী যেই হোক আওয়ামী লীগের কর্মীরা নৌকার পক্ষে কাজ করবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু প্রার্থী নির্ধারণের মতো গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় নিয়ে দলের সাধারণ সম্পাদকের বরাত দিয়ে বিভ্রান্তিকর প্রচারণা ঠিক নয়। এতে দলের নেতাকর্মীরা বিব্রত হচ্ছে। নৌকার প্রার্থী সালমান এফ রহমান বা মান্নান খান কিংবা অন্য যে কেউ হোক না কেন, দলীয় হাইকমান্ড যাকে প্রার্থী করে পাঠাবে কর্মীরা তাঁর পক্ষেই কাজ করবে। আমাদের প্রতীক হবে নৌকা।
এ বিষয়ে জানতে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, নির্বাচনে মনোনয়নের বিষয় এখনো অনেক দূর। ঢাকা ১ আসনে নির্দিষ্ট কাউকে মনোনয়ন দেওয়ার কথা বলিনি। তিনি বলেন, মনোনয়নের বিষয়টি আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বোর্ডের হাতে। ওই বোর্ডের প্রধান দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনা। তার নেতৃত্বে মনোনয়ন বোর্ডই চূড়ান্ত করবে কোন আসন থেকে কে নির্বাচন করবে। সে অর্থে মনোনয়নের বিষয় তো বহুদূরে। আমি দোহারের জনসভায়ও বিষয়টি স্পষ্ট বলেছি।
তবে সালমান এফ রহমান ও দোহার উপজেলা আওয়ামী লীগের কয়েকজনের নেতা তাঁর সাথে দেখা করার বিষয়টি তিনি স্বীকার করে বলেন, মনোনয়নের বিষয়ে কোনো কথা হয়নি, সবাইকে নৌকার পক্ষে কাজ করতে বলেছি।
No comments