চট্টগ্রামে বাড়ছে ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়ারও ঝুঁকি
চট্টগ্রামে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব বাড়ছে। গত জুন মাসে চট্টগ্রামে ৭৫ জন ডেঙ্গু রোগী পাওয়া যায়। এই সংখ্যা আগের মাসের চেয়ে ১৯ জন বেশি। ডেঙ্গু রোগী বেড়ে যাওয়ার এই প্রবণতা আশঙ্কাজনক বলে উল্লেখ করেছেন চিকিৎসকেরা। এর ফলে চিকুনগুনিয়া রোগের ঝুঁকিও বাড়ছে বলে মনে করছেন তাঁরা।
চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন আজিজুর রহমান সিদ্দিকী বলেন, ডেঙ্গু রোগী যে হারে পাওয়া যাচ্ছে তা আশঙ্কাজনক। এডিস জাতীয় মশার কামড়ে ডেঙ্গু হয়। একই ধরনের মশার কারণে চিকুনগুনিয়াও হয়। তাই যেহেতু এডিস মশা রোগ ছড়াচ্ছে, সে কারণে চিকুনগুনিয়ার ঝুঁকিও বাড়ছে। যদিও এখনো চট্টগ্রামে কোনো চিকুনগুনিয়া রোগী পাওয়া যায়নি।
সিভিল সার্জন আজিজুর রহমান সিদ্দিকী বলেন, ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া দুটি রোগের লক্ষণও অনেকটা এক রকম। কেবল চিকুনগুনিয়ায় হাড়ে ব্যথা হয়। তবে এতে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।
সিভিল সার্জনের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, মে মাসে চট্টগ্রাম নগরে ৫৬ জন ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়। এরপর গত মাসে ডেঙ্গু রোগী পাওয়া যায় ৭৫ জন। তবে তারা এখন সুস্থ রয়েছে। ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়ার সার্বিক পরিস্থিতি দেখতে রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক মীরজাদী সাবরিনা ফ্লোরার আজ শনিবার চট্টগ্রামে আসার কথা রয়েছে। তিনি সিভিল সার্জনের কার্যালয়ে এ নিয়ে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকদের সঙ্গে বৈঠক করবেন বলে জানা গেছে।
এদিকে, ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া প্রতিরোধে চট্টগ্রাম নগর ও জেলায় বিভিন্ন সচেতনতামূলক কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে। নগরসহ প্রতিটি উপজেলায় খোলা হয়েছে নিয়ন্ত্রণকক্ষ। চট্টগ্রামে চিকুনগুনিয়ার কোনো রোগী পাওয়া যায়নি। তারপরও সাবধানতার অংশ হিসেবে প্রচারণা চালানো হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানান।
গত বুধবার ‘চট্টগ্রাম জেলা র্যাপিড রেসপন্স টিম ফর ডেঙ্গু অ্যান্ড চিকুনগুনিয়া’ নামে নয় সদস্যের একটি দল গঠন করা হয়। সিভিল সার্জন কার্যালয়ের চিকিৎসক মো. নুরুল হায়দারকে এই দলের প্রধান করা হয়। একইভাবে প্রতিটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেও ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া প্রতিরোধে পৃথক দল গঠন করা হয়।
এর আগে গত মঙ্গলবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদ ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে চট্টগ্রামের সিভিল সার্জনকে নিয়ন্ত্রণকক্ষ ও রেসপন্স টিম গঠন করার নির্দেশ দেন।
সিভিল সার্জন বলেন, ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া প্রতিরোধের জন্য বাহক মশার প্রজননস্থান ধ্বংসের জন্য চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনকে অবহিত করবে নিয়ন্ত্রনকক্ষ। এ ছাড়া চিকুনগুনিয়া রোগীর সন্ধান পাওয়া মাত্র নিয়ন্ত্রণকক্ষকে অবহিত করার জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। নগরের বিভিন্ন রোগ নির্ণয়কেন্দ্রকে রোগী পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে জানাতে বলা হয়েছে।
No comments