যে ৬ কারণে এই গ্রহের সেরা খেলোয়াড় রোনালদো
ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো |
বর্তমান সময়ে ফুটবল বিশ্বের সেরা খেলোয়াড় বলতে যাদের নাম সবার আগে মনে আসে তারা হলেন পর্তুগাল সুপারস্টার ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো এবং আর্জেন্টাইন ফুটবল জাদুকর লিওনেল মেসি। দুজনেরই অসংখ্য ভক্ত আছে; আবার গালিগালাজ করার লোকেরও অভাব নেই। তবে ভালোবাসুন আর গালাগাল দিন, আপনি তাদের থেকে মুখ ফিরিয়ে থাকতে পারবেন না। বিশেষত রোনালদো। এমন বর্ণময় চরিত্র সমগ্র ক্রীড়া জগতে খুঁজে মেলা ভার!
রোনালদো কেমন ফুটবলার তা নিয়ে আলোচনার কোনো প্রয়োজন নেই। তবে কেমন মানুষ তিনি, তা জানলে অনেকেই অবাক হবেন। শুধু অবাকই হবেন না, কয়েকটি ঘটনার কথা জানলে তাকে রীতিমতো ভালোবেসে ফেলবেন! কথায় আছে ভালো মানুষ না হলে কোনও কিছুই ভালো করা সম্ভব নয়। আর ভালো খেলোয়াড় হলেও যিনি ভালো মানুষ হতে পারেন না; তার ভক্তকুল কিছুদিন পরেই উধাও হয়ে যায়। যার অনেক উদাহারণ আছে। এবার জেনে নিন ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো সম্পর্কে কিছু অজানা বিষয়:
১. ২০১৪ সালে ১০ মাসের এরিক ওর্তিজ ক্রুজের বাবা-মা রোনালদোর কাছে ছেলের ব্রেন সার্জারির জন্য একটি জার্সি এবং এক জোড়া বুট চান। সেটা নিলামে তুলে টাকা সংগ্রহের চেষ্টা করাই ছিল তাদের উদ্দেশ্য। কিন্তু রোনালদো সেটা করেননি! উল্টো এরিকের চিকিত্সাের সমস্ত খরচ বহন করেন তিনি। অপারেশন হওয়ার পরেও অতিরিক্ত ৫৫ হাজার পাউন্ড তার চিকিত্সার জন্য এরিকের অভিভাবকদের হাতে তুলে দেন। জার্সি আর বুট জোড়া আজ এরিকের বাড়িতে শোভা পায়। ওটা ছিল ভালোবাসার উপহার।
২. ২০০৫ সালে ভয়ঙ্কর সুনামিতে ওলট পালট হয়ে গিয়েছিল বহু মানুষের জীবন। ইন্দোনেশিয়ায় রোনালদোর পর্তুগালের জার্সি পরে সুনামি আক্রান্ত একটি ছেলের ছবি কাগজে বার হয়। তার নাম ছিল 'মার্তুনিস'। রোনালদো নিজের উদ্যোগে ইন্দোনেশিয়া থেকে ছেলেটিকে পর্তুগালে নিয়ে যান এবং স্পোর্টিং লিসবন অ্যাকাডেমিতে ভর্তি করে দেন। আজ সেখানেই নিজের ফুটবল কেরিয়ার শুরু করেছেন মার্তুনিস। এই ক্লাব থেকেই ফুটবল কেরিয়ার শুরু করেন রোনালদো নিজেও।
৩. ২০১৬ সালে চ্যাম্পিয়নস লিগ জেতার বোনাস হিসাবে যে ৬ লক্ষ ইউরো পেয়েছিলেন তা বিশ্বের বিভিন্ন সংস্থায় সমাজসেবার কাজে দান করেন রোনালদো।
৪. ভয়াবহ ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত নেপালের সাহায্যে ৫০ লক্ষ পাউন্ড দান করেন রোনালদো। নিজের বহু জার্সি এবং নানা সরঞ্জাম দুর্গতদের কাছে পাঠান তিনি।
৫. বিশ্বের গুটিকতক খেলোয়াড়দের মধ্যে রোনালদো একজন, যার শরীরে একটিও ট্যাটু দেখা যাবে না। বিশ্বের যুবসমাজকে রক্তদানে আগ্রহী করে তুলতে এই পদক্ষেপ নিয়েছেন তিনি। নিজেও বছরে অন্তত ২ বার রক্ত দান করেন।
৬. সারা বিশ্বের বহু হাসপাতালে যান রোনালদো। প্রত্যেক ক্ষেত্রেই রোজগারের একটা বড় অংশ চ্যারিটি হিসাবে দান করেন তিনি। বিশেষত মারণ রোগে আক্রান্ত কোনও শিশু সাহায্য চাইলে কখনও ফেরাননি। ক্রীড়াবিদ হিসাবে বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে বেশি অর্থ দান করে থাকেন রোনালদোই। তার ট্রফি রাখার ক্যাবিনেট যত বড়, হৃদয় তার চাইতেও অনেক বেশি বড়।
এ ছাড়াও রোনালদো কখনও তার কোনো ফ্যানকে খালি হাতে ফেরান না। তা সে অটোগ্রাফ হোক, সেলফি তোলা হোক বা জার্সি- যখন যা চেয়েছেন তার ভক্তরা এক কথায় দিয়ে দিয়েছেন। এই রিপোর্টের মানে এই নয় যে, রোনালদোর চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে খ্যাত লিওনেল মেসি খারাপ লোক। মেসির মহানুভবতা নিয়ে লেখা যাবে অন্য কোনো দিন।
No comments